প্রকাশিত: Tue, Mar 26, 2024 12:06 PM
আপডেট: Tue, Apr 29, 2025 3:49 AM

[১]বিএনপি এখনও ভারতীয় পণ্য বর্জনের আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত নেয়নি

শাহানুজ্জামান টিটু: [২] ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর বাংলাদেশে ভারতীয় পণ্য বর্জন আহ্বান জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্যাম্পেইন শুরু হয়। এতে ব্যাপক সাড়া পড়ে। ভারতীয় বিভিন্ন মিডিয়া ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বাংলাদেশে এই ক্যাম্পেইনের বিরোধিতা শুরু হয়। ইতোমধ্যে ভারতীয় পণ্য বর্জন বিষয়ে আর্ন্তজাতিক গণমাধ্যমেও খবর প্রকাশ হয়েছে। 

[৩] গত ১৬ মার্চ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের রাজধানীর ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সম্মেলনে বলেন,  ভারত পাশে ছিল বলেই বাংলাদেশের নির্বাচনে বিশ্বের বড় বড় রাষ্ট্র অশুভ হস্তক্ষেপ করতে পারেনি। 

[৩.১] তার এই বক্তব্যের পর নড়েচড়ে বসে বিএনপি। গত ২০ মার্চ দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহসাচিব রহুল কবির রিজভী দলের নয়াপল্টন দলীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশে নিজের গায়ে থাকা ভারতীয় চাদর ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে চলমান ভারতীয় পণ্য বর্জনের আহ্বানের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেন। 

[৩.২] বিএনপির এই গুরুত্বপূর্ণ নেতার আহ্বানের প্রতি বিএনপির অধিকাংশ নেতাকর্মী সর্মথন জানিয়েছেন। বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের একটিই বক্তব্য, বিএনপি দেশের পক্ষে কথা বলার অর্থ এই নয় যে অন্য রাষ্ট্রের বিরোধিতা করা। 

[৪] যদিও ভারতীয় পণ্যবর্জন বিষয়ে বিএনপি এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দেয়নি। বিএনপি মনে করে, ক্ষোভ থেকে ভারতীয় পণ্য বর্জন করছে মানুষ। দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল হিসেবে এর প্রতি সর্মথন থাকবে বিএনপির।  

[৫] দলের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের এক নেতা বলেন, ২০১৪ সালের পর থেকে ভারত এককভাবে আওয়ামী লীগের পক্ষে অবস্থান নিয়ে দেশের গণতন্ত্র ধ্বংসের সকল অপকর্মকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। এর সর্বশেষ উদাহরণ ৭ জানুয়ারির নির্বাচন। বন্ধু ও প্রতিবেশি রাষ্ট্র হিসেবে ভারতের উচিত নয় কোনো একটি রাজনৈতিক দলের সাথে সর্ম্পক করা। তাদের উচিত এদেশের জনগণের সঙ্গে সর্ম্পক তৈরি করা। এতে করে উভয় রাষ্ট্র লাভবান হবে। কিন্তু একটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে একক সর্ম্পকের কারণে ক্রমশঃ এদেশের মানুষ ভারতবিরোধী ও ভারতবিমুখ হয়ে উঠছে। তাদের নীতিনির্ধারকদের এ বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা উচিত। 

[৬] বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক বলেছেন, দিল্লির দাসত্ব করার জন্য যুদ্ধ করি নাই। আমরা মনে করি বাংলাদেশের মানুষ ভারতবিদ্বেষী নয়। বরং তারা ভারতের বর্তমান নেতৃত্বের প্রতি বিদ্বেষী। জনগণ ভারতীয় পণ্য বর্জন করার কারণ, তাদের দেশে গণতন্ত্র থাকবে আমাদের দেশে থাকবে না- এটা হতে পারে না। তিনি বলেন, এটা দলগত সিদ্ধান্ত নয়, দলের স্ট্যান্ডিং কমিটিতে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। বাংলাদেশের মানুষের প্রত্যাশা, ভারত আমাদের বন্ধু দেশ। তারা প্রভু না হয় বন্ধু হোক।

[৭] দলের যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, দেশে একতরফা নির্বাচনের পেছনে ভূমিকা রেখেছে ভারত। এসব কারণে দেশটির প্রতি এদেশের মানুষের বিরূপ মনোভাব তৈরি হয়েছে। ৭ জানুয়ারির নির্বাচন ঘিরে আওয়ামী লীগের বক্তব্য থেকে এটা স্পষ্ট হয়েছে এতে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের ওপর হস্তক্ষেপ। আর এর সঙ্গে যারা থাকবে তাদের সাথে আমাদের কোনো বন্ধুত্ব হতে পারে না। তাদের সাথে সর্তকভাবে আচারণ করবো। 

[৮] বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী অ্যানি বলেন, গত ২০ মার্চ দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রহুল কবির রিজভী জাতির সামনে ভারতীয় পণ্য বর্জনের আহ্বান জানিয়েছেন। এতে আমি এমন কোনো বক্তব্য দেখি না, যা বন্ধু রাষ্ট্রকে অসম্মান করবে। বরং তাদের উচিত শ্রদ্ধার সঙ্গে দেখা। সম্পাদনা: সালেহ্ বিপ্লব